
বোটানিক্যাল গার্ডেন | ঢাকা
বাংলাদেশ জাতীয় উদ্যান (বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম)ই সবার কাছে বোটানিক্যাল গার্ডেন নামে পরিচিত। বোটানিক্যাল গার্ডেন ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রায় ২০৮ একর জায়গা জুড়ে। সত্তরের দশকে তৎকালিন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যানের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

উদ্যানটি ঢাকা চিড়িয়াখানার পাশে মিরপুরে অবস্থিত। উদ্যানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০০ দর্শনার্থী নিজে এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে আসেন। এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘেরা উদ্যানটিতে প্রায় নয় শতাধিক প্রকৃতির মোট ৬৮ হাজারেরও বেশি বৃক্ষ রয়েছে যা যে কোন দর্শনার্থীর মন কেড়ে নেওয়ার মতো।
বোটানিক্যাল গার্ডেনে আছে বিভিন্ন ধরনের দেশি ও বিদেশি গাছ যা একজন পর্যটককে আকৃষ্ট করে প্রকৃতির প্রেমে সাড়া দিতে। এখানে আছে নাগনিঙ্গম গাছ যা দেখতে প্রায় সাপের মতো তাই এই অদ্ভুত নাম করন। আরো রয়েছে আমাজন লিলি, সিলভার ওক, জ্যাকারান্ডা, ট্যাবে বুইয়া, কর্পার, ওয়েল পাম, রামবুতাম ইত্যাদি সহ রয়েছে প্রায় দুই শতাধিক প্রকৃতির গোলাপ সংগ্রহ।

পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে গার্ডেনের ভিতরে প্রায় ৬০ জনেরও অধিক নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।
উপভোগ করার মতো কিছুঃ
বোটানিক্যাল গার্ডেনে রয়েছে হরেক রকমের গাছের পাশাপাশি রয়েছে সুদৃশ্য লাল গোলাপের বিশাল বাগান। দর্শনার্থীদের আরো বেশি করে আনন্দ দিতে তৌরী করা হয়েছে কৃত্রিম লেক আর লেকের মাঝখানে রয়েছে কৃত্রিম দীপ ও জলপ্রপাত এবং ডেক।
লেকের পাড়ে রয়েছে অনেক চেয়ার যাতে বসে পর্যটকগন প্রকৃতিকে উপভূগ করতে পারবে। আবার পর্যটকগন ডেকে দাঁড়িয়ে লেক, প্রাকৃতিক দৃশ্য ও কৃত্রিম জলপ্রপাত উপভূগ করতে পারবে।

এখানে আছে দুটি পুকুর যার একটির নাম হলো শাপলা পুকুর এবং অন্যটি পদ্মপুকুর । আর এই শাপলা ও পদ্মের ঘ্রাণে যেকারোরি মনপ্রান উৎফুল্য করতে সাহায্য করে। এখানে পাবেন পরিচিত অপরিচিত শতশত প্রজাতির উদ্ভিদের সংগ্রহশালা।
বোটানিক্যাল গার্ডেন বন্ধ ও খুলার সময়সূচীঃ
বছরে বোটানিক্যাল গার্ডেন খুলার এবং বন্ধের দুটি বিভিন্ন সময়সূচী রয়েছে।মার্চ থেকে নভেম্বর মাসে সাধারণত সকল ৯.০০ টা থেকে বিকেল ৫.০০ পর্যন্ত খুলা থাকে এবং ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারীতে সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকেল ৪.৩০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
প্রবেশ মূল্যঃ
বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ মূল্য সাধারণ পূর্ণ বয়স্কদের জন্য ১০ টাকা, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ( বাচ্চাদের ) জন্য জনপ্রতি ৫ টাকা।
কিন্তু শিক্ষা সফরে আসা দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে আকর্ষনীয় ব্যবস্থা । কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে জনপ্রতি ৩ টাকায় গার্ডেনে প্রবেশ করতে পারবে।
খাবারের ব্যবস্থাঃ
আপনি যদি অল্পমূল্যে খাবার দাবার শেষ করতে চান তাহলে সাধারণত বোটানিক্যাল গার্ডেনের আশেপাশের ফাস্ট ফুড দোকানগুলোতে না যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ এখানকার খাবারের দাম একটু বেশিই হয়।তাই ভালো ও মানসম্মত খাবারের জন্য মিরপুর-১ কিছু স্পেশাল রেষ্টুরেন্ট আছে যাতে সল্পমূল্যে খাবার দাবারটা সেরে নিতে পারবেন।
যেভাবে যাবেনঃ
আপনি যদি অল্প খরচে বোটানিক্যাল গার্ডেনে যেতে চান তাহলে গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে লেগুনায় করে সরাসরি বোটানিক্যাল গার্ডেনে যেতে মাত্র ১০ টাকা ভাড়া নিবে। অন্যদিকে সদরঘাট থেকে যদি আসতে চান তাহলে সদরঘাট বাস টার্মিনাল থেকে মিরপুর-১ বাসে করে মাত্র ২৫ টাকায় ই বোটানিক্যাল গার্ডেনে যেতে পারবেন।
আর যদি আপনার বাস বা লেগুনায় চড়তে আপনার সমস্যা হয় তাহলে অ্যাপ ভিক্তিক রাইডশেয়ার ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার যাতায়াত খরচ বেড়ে যাবে।